অনলাইন ডেস্ক : ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ১০ বছর মেয়াদি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে সই করেছে। প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা বাড়াতে এই কাঠামোগত চুক্তি সই হয়েছে বলে উভয় দেশের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও ডিটারেন্স বা উত্তেজনা প্রশমন সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও’ ভূমিকা রাখবে এই চুক্তি। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এই চুক্তি সই হয়। সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কুয়ালালামপুরে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বৈঠকের পর এই চুক্তির ঘোষণা দেয়া হয়। হেগসেথ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে ‘সমন্বয়, তথ্য আদান-প্রদান ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা’ আরও জোরদার করবে। পাশাপাশি এটি ‘আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও ডিটারেন্স বা উত্তেজনা প্রশমন সক্ষমতা বাড়াতেও’ জোরালো ভূমিকা রাখবে।
চুক্তিটি এমন একসময়ে হলো, যখন দুই দেশ বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। রাশিয়ার জ্বালানি তেল ও অস্ত্র কেনার কারণে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সব মিলিয়ে এখন ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
চুক্তিটি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সম্পর্কের পুরো কাঠামোর জন্য নীতি নির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এক্সে লিখেছেন, ‘কুয়ালালামপুরে হেগসেথের সঙ্গে আমরা বৈঠক হয়েছে। আমরা একটি ১০ বছর মেয়াদি বড় আকারের ভারত-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা অংশীদারত্ব ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি সই করেছি। এটি আমাদের বিদ্যমান প্রতিরক্ষা অংশীদারত্বে নতুন যুগের সূচনা। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে থাকবে। স্বাধীন, উন্মুক্ত ও সুশৃঙ্খল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আমাদের অংশীদারত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
এই চুক্তির বিষয়ে থিঙ্কট্যাংক ইউরেশিয়া গ্রুপের বিশ্লেষক প্রমিত পাল চৌধুরী জানান, চুক্তিটি আসলে জুলাই-আগস্ট মাসেই সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ট্রাম্পের পাকিস্তান নিয়ে দেয়া কিছু মন্তব্যে ভারতের অসন্তোষের কারণে বিষয়টি বিলম্বিত হয়। তার মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে, যা ‘দুই সেনাবাহিনীর সমন্বিত কাজের সক্ষমতা বাড়িয়েছে, প্রযুক্তি বিনিময় সহজ করেছে এবং প্রতিরক্ষা খাতে যৌথ উদ্যোগের সুযোগ সৃষ্টি করেছে’। তিনি আরও বলেন, ‘এই নতুন চুক্তি তিন ক্ষেত্রেই আরও সম্ভাবনার দরজা খুলে দিচ্ছে।’

