অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের সঙ্গে গত সেপ্টেম্বরে স্বাক্ষরিত ৪ হাজার ১৬০ কোটি ডলারের বাণিজ্য চুক্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাণিজ্য ছাড় নিয়ে মতের মিল না হওয়ায় ট্রাম্প প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ওয়াশিংটন এবং লন্ডনের মধ্যে ঐতিহাসিক প্রযুক্তি চুক্তি, যাকে ‘টেক প্রসপারিটি’ ডিল বলা হয়, তা যুক্তরাজ্যের বৃহত্তর বাণিজ্য বাধা সম্পর্কে মার্কিন উদ্বেগের কারণে স্থগিত রয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফরের সময় যখন এই চুক্তির ঘোষণা করা হয়েছিল। এই চুক্তির লক্ষ্য ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বেসামরিক পারমাণবিক ফিউশন এবং কোয়ান্টাম প্রযুক্তি সহ কৌশলগত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শাখায় পারস্পরিক স্বার্থের যৌথ সুযোগের দিকে সহযোগিতা সক্ষম করা।
তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড (৪১.৬ বিলিয়ন ডলার) মূল্যের এই চুক্তিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘একটি প্রজন্মগত পরিবর্তনের পদক্ষেপ’ হিসেবে প্রশংসা করেছিলেন।
এদিকে আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, লন্ডনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে ওয়াশিংটনে ক্রমবর্ধমান হতাশার মধ্যে চুক্তিটি স্থগিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ কর্মকর্তারা সোমবার নিশ্চিত করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে চুক্তিটি স্থগিত করেছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতের কিছু কিছু ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্কছাড় সুবিধা দিতে রাজি হয়েছিল লন্ডন, কিন্তু এতে সন্তুষ্ট ছিল না ওয়াশিংটন। মার্কিন কর্মকর্তারা চাইছিলেন, শুল্কমুক্ত ক্ষেত্রের পরিধি যেন আরও বাড়ানো হয়।
আলোচনার সাথে পরিচিত একজন ব্রিটিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্বের বাইরে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের ছাড়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। এছাড়াও খাদ্য ও শিল্প পণ্য নিয়ন্ত্রণকারী নিয়মসহ তথাকথিত অ-শুল্ক বাধা মোকাবেলায় ব্রিটেনের অনীহায় মার্কিন কর্মকর্তারা ‘ক্রমবর্ধমানভাবে হতাশ’ হয়ে উঠছেন।
অন্যদিতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস, যারা প্রথম এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছিল- বলেছে, উভয় পক্ষের মধ্যে বৃহত্তর মতবিরোধ রয়েছে, যার মধ্যে ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণ এবং খাদ্য সুরক্ষা বিধি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই ইস্যুতে চলতি ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে তাদের। কিন্তু উভয়পক্ষ নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থাকায় অবশেষে গত সপ্তাহে এই চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
সূত্র: আনাদোলু
