অনলাইন ডেস্ক : জীবনের প্রথম হজ করার জন্য ২০ বছর ধরে অর্থ জমিয়েছেন মিসরের দুই বোন জামালাত এবং সুয়াদ। তারপর চলতি বছর হজের জন্য মক্কাতেও আসেন তারা; কিন্তু হজের শুরুর দিনই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন জামালাত, যা সুয়াদকে সীমাহীন শোকের মধ্যে ফেলেছে।
আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের তথ্য অনুযায়ী, মিসরের সাধারণ নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা দুই বোন হজের জন্য ২০০২ সাল থেকে অর্থ সঞ্চয় শুরু করেন। ২১ বছর ধরে অর্থ সঞ্চয়ের পর বছর হজ করার জন্য কিছুদিন আগে মক্কায় আসেন তারা।
২৬ জুন থেকে শুরু হয়েছে হজ; আর এই দিনই মারা গেছেন জামালাত। ২১ তারিখ মিসর থেকে মক্কায় এসেছিলেন দুই বোন।
জামালাতের মৃত্যুতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন সুয়াদ। মৃত্যুর আগে শেষ সময়ে বোনের পাশে ছিলেন তিনি।
সৌদির বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কাঁদতে কাঁদতে সুয়াদ বলেছেন, ‘জামালাত ছিল আমার আবলম্বন, আমার সহায়। হজে আসার জন্য ২০ বছর ধরে আমরা কত পরিকল্পনা করেছি, কত স্বপ্ন দেখেছি। শেষ পর্যন্ত যখন আমাদের স্বপ্ন সত্যি হতে চলল, তখনই জামালাত আমাকে ছেড়ে চলে গেল!’
সুয়াদ জানান, হজের আচার-অনুষ্ঠান পালনের মতো মানসিক অবস্থা তার নেই। কিন্তু জামালাতের শেষ ইচ্ছা ছিল— তিনি না পারলেও সুয়াদ যেন হজ শেষ করেন। বোনের শেষ ইচ্ছা পূরণের জন্যই হজ শেষ করবেন তিনি।
মক্কাতেই জামালাতকে দাফন করা হয়েছে উল্লেখ করে সুয়াদ বলেন, ‘হজের সৌন্দর্য আমরা দুই বোন একসঙ্গে উপভোগ করতে চেয়েছিলাম। তা আর হলো না। মৃত্যুর আগে সে জানিয়েছিল—তাকে যেন মক্কায় দাফন করা হয়। তার ইচ্ছে অনুযায়ী এখানেই তাকে দাফন করা হয়েছে।’
ইসলামের পঞ্চম স্থম্ভের নাম হজ। এই ধর্মের বিধান অনুযায়ী প্রত্যেক সামর্থবান মুসলিম নর-নারীর জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ করা অতি আবশ্যিক বা ফরজ।
করোনা মহামারির কারণে সীমান্ত বিধিনিষেধ জারি থাকায় ২০২০ ও ২০২১ সালে বিদেশি হজযাত্রীরা হজ করতে যেতে পারেননি সৌদিতে। তবে চলতি বছর থেকে যাবতীয় বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে দেশটির সরকার।
সৌদির হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ২০ লাখেরও বেশি হজযাত্রীর আগমন ঘটেছে দেশটিতে।
সূত্র : গালফ নিউজ
© 2025 সর্বসত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি Develop By: Md Shovon Khan