অনলাইন ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করেছেন, যদি হামাস তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নিজেদের নিরস্ত্র না করে, তবে যুক্তরাষ্ট্র ‘প্রয়োজনে সহিংসভাবে’ তাদের নিরস্ত্র করবে। তিনি আরও বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর হলেও ‘কাজ এখনো শেষ হয়নি’, কারণ হামাস এখনো সব মৃত বন্দির দেহ ফেরত দেয়নি, যেমনটি তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন,‘আমি হামাসকে বলেছি, ‘আপনারা অস্ত্র ছাড়বেন, তাই তো?’ তারা বলেছেন, ‘হ্যাঁ স্যার, আমরা অস্ত্র ছাড়ব।’- এটাই তারা জানিয়েছেন। তারা অস্ত্র ছাড়বে, না হলে আমরাই তাদের নিরস্ত্র করব।’ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েলে বুধবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত প্রতিবেদনের এমন সব বলা হয়েছে।
ট্রাম্প পরে স্পষ্ট করেন যে এটি সরাসরি হামাস নেতাদের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কথা নয়, বরং তার ‘মানুষদের মাধ্যমে’ বার্তা দেয়া হয়েছে। এখানে তিনি ইঙ্গিত করেছেন মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং তার জামাতা জ্যারেড কুশনার-এর দিকে।
গত সপ্তাহে উইটকফ ও কুশনার মিশরের শার্ম আল-শেখে হামাসের শীর্ষ আলোচক খালিল আল-হাইয়্যা-র সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তারা আশ্বাস দেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকেও যুদ্ধবিরতির শর্ত মানতে বাধ্য করবে এবং গাজার পুনর্গঠন প্রক্রিয়া তদারকি করবে।
ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় করা সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি চুক্তি শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী, হামাস সোমবার পর্যন্ত বেঁচে থাকা ২০ বন্দিকে মুক্তি দেয়। একই সঙ্গে, মৃত সব বন্দির দেহ ফেরত দেয়ার কথাও ছিল, কিন্তু হামাস এখন পর্যন্ত মাত্র চারটি দেহ হস্তান্তর করেছে।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ অঞ্চলের ধ্বংসস্তূপে অনেক দেহ উদ্ধার করা কঠিন, এবং যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে কিছুটা সময় দিতে হবে।
ট্রাম্প বলেন,‘চুক্তির শর্তগুলো এখনও পুরোপুরি পূরণ হয়নি। মৃতদেহ ফেরত আসেনি। হামাস প্রতিশ্রুত দেহের সংখ্যাও ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে।’
এই মন্তব্যের মাধ্যমে ট্রাম্প বোঝাতে চান, যুদ্ধবিরতির সাফল্য এখনো অনিশ্চিত এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে। ট্রাম্পের এই বক্তব্য তার প্রশাসনের নতুন মধ্যপ্রাচ্য নীতির ইঙ্গিত দেয়, যেখানে ইসরায়েল ও হামাস উভয়কেই সমানভাবে জবাবদিহির আওতায় আনতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে ‘সহিংসভাবে নিরস্ত্র করার’ মন্তব্যটি গাজায় নতুন করে সামরিক উত্তেজনা তৈরি করতে পারে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের আশঙ্কা।মার্কিন ঘনিষ্ঠ আরব মিত্ররা, বিশেষ করে কাতার ও মিশর- এখন পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

